মোদিকে মমতার কাজের প্রতিযোগিতায় নামার পরামর্শ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ০২:৫০ মিঃ, আগস্ট ১৭, ২০১৯
কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক রেষারেষি বন্ধ করে কাজের প্রতিযোগিতায় নামতে আহবান জানালেন। সরাসারি নরেন্দ্র মোদির নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, আমরা কেউ হিংসা, অশান্তির প্রতিযোগিতায় নেই। আসুন, আমরা কাজের প্রতিযোগিতা করি। শুক্রবার নবান্নের সভাঘর থেকে হাওড়া জেলায় ন’টি শিল্প পার্কের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, মোট ১,৬৩৩ একর জমিতে তৈরি এই শিল্পপার্কে ১৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হল। দু’লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দূর্ভাগ্য, আমাদের এখানে সবসময় নেগেটিভ কথাই বেশি প্রচার পায়। সাধারণ মানুষের প্রতি যেমন আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে, ঠিক তেমনই শিল্পের প্রতিও আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। একদিন সবাই এই বাংলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, আজ তারা সবাই ফিরে আসছে। আমি চাই শিল্প হাসুক। এদিন শিল্পপতিরাও মমতার উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স প্রভৃতি পেতে সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম চালু করতে শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রকে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোনও কাজের যেন দীর্ঘসূত্রিতা না হয়। এর জন্য একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে। তাঁর অধীনে চার-পাঁচজন অফিসারকে রাখতে হবে। জেলাশাসককে অনেক কাজ করতে হয়। তাই এই নোডাল অফিসার সব দেখভাল করবেন। সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, ঠিকমতো কাজ হয় না। অনেকে ভাবেন, আমার মনমতো না হলে কাজ করব না। কতটা প্লাস, না কতটা মাইনাস সেসব দেখব। এসব চলবে না। মনে রাখতে হবে, সময়ের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ৬৯-৭০ শতাংশ কর্মসংস্থান হয় শুধুমাত্র ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প থেকে। দেশের জাতীয় আয়ের ১৪ শতাংশ আসে শুধুমাত্র এরাজ্যেতর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প থেকেই। হাওড়াকে পুনরায় 'শেফিল্ড অব ইস্ট' করা হবে। এদিন হাওড়ায় জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্ক, জগদীশপুরে হোসিয়ারি পার্ক, সাউথ সিটি আনমোল ইনফ্রা পার্ক, ফাউন্ড্রি পার্ক, জগৎবল্লভপুরে মিনি ফাউন্ড্রি পার্ক, কেমিক্যাল পার্ক, সাঁকরাইলে মেগা লজিস্টিক পার্ক-এর উদ্বোধন হলো। এছাড়াও ‘ডিজিটাল পাবলিক লাইব্রেরিসহ খাদ্যাশ্রী ভবন ও ৯০টি প্যাসেঞ্জার শেল্টারের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী নবান্নের সভাঘর থেকে।
অমিত মিত্রকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের ব্যবস্থা একটু ভালো করে দেখতে হবে। গ্রামের মানুষকে কর্মদিশা দেখাতে হবে। সেই কাজে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে। এক্সপোর্ট সেন্টার যাতে হাওড়া, হলদিয়াতে করা যায়, সেটাও দেখার পরামর্শ দেন। মুখ্যকমন্ত্রী বলেন, কথায় কথায় গেট বন্ধ করে ঝান্ডা নিয়ে বসে পড়া ঠিক নয়। দ্রুতগতিতে কাজ করার জন্য মেকানিজম তৈরি করুন। আমরা কেউ হিংসা, অশান্তির প্রতিযোগিতায় নেই। পশ্চিমবঙ্গ শিল্পের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ।
মন্তব্যঃ সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ 16811 বার।