ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ১৯ ২০২৪,

এখন সময়: ০২:২৯ মিঃ

৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে ভাষণ নয়, হোক দেশ সেবার প্রেরণা

ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে এবং মামুন আ. কাইউম | ১০:০৬ মিঃ, জুলাই ১৮, ২০১৮



৭ই মার্চ শুধুই একটি দিন নয়, বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ক্ষণ। ১৯৭১ সালের এই দিনে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) স্বাধীনতাকামী একটি জাতিকে স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখানোর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার পরোক্ষ ঘোষণা প্রদানে সফল ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভাষণটি একটি অনবদ্য দলিল হিসেবে বাঙ্গালীর মনিকোঠায় স্থান পেয়েছে। ভাষণটিতে তিনি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ- বঞ্চনা থেকে বের হয়ে ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত, স্বাধীন- সার্বভৌম সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন  দেখিয়েছিলেন। এখন বাংলাদেশ বিজয়ের পঞ্চাশের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। জাতির জনকের ৭ মার্চের ভাষণটির মর্মার্থ প্রকৃত অর্থে লালন ও ধারণ করতেপারলেই আমরা পেতে পারি কাঙ্খিত সোনার বাংলা।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। দীর্ঘ ৪৬ বছর পর ‘মেমরী অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রার’ এ অন্তর্ভুক্ত এটিই বাংলাদেশী একমাত্র দলিল। ইউনেস্কো গত ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করেছে। এ অর্জন শুধু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উচ্চ আসনে নিয়ে যায়নি, নিয়েছে বাংলাদেশকে, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকেও। জাতির জনকের এ ভাষণের বিভেন্ন পরিসর নিয়ে দেশে বিদেশে গবেষণাও সম্পাদিত হয়েছে। ভাষণটির এমন অর্জন এমনি এমনি আসেনি, বরং রাজনৈতিক যোগাযোগের এমন ভাষণ বিশ্বে বিরল বললে ভুল হবে না।

দশ লক্ষ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেসকোর্স ময়দানের এ ভাষণ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। এই দিনের ভাষণটিকে অনেকেই স্বাধীনতার মূলমন্ত্র হিসেবে দেখেছেন। এই ভাষণের মাধ্যমে যেমন একদিকে কূটনীতিক সফলতা অর্জন সম্ভব হয়েছিল তেমনি উপস্থিত ও অনুপস্থিত বাঙ্গালীর দৃঢ়চিত্তে নয় মাসের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার দীক্ষা গ্রহণ করেছিল। ভাষণটি এতটাই গুরুত্ববহ ছিল যে, ঐ বছরই ৫ এপ্রিল আন্তর্জাতিক বিখ্যাত ম্যাগাজিন নিউজউইক এর প্রচ্ছদ নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজনৈতিক কবি’ বলে আখ্যায়িত করেছিল।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের গুটেসবার্গ ভাষণের সাথেও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে তুলনা করা হয়। যদিও দুটো ভাষণের পরিপ্রেক্ষিত, সময় এবং শব্দ সংখ্যার পার্থক্য ছিল। অলিখিত ১৯ মিনিটের ভাষণে বঙ্গবন্ধু প্রতি মিনিটে ৫৯ থেকে ৬১টি শব্দের ব্যবহার করেছিলেন যাতে মোট শব্দ সংখ্যা ছিল ১,১৬২টি। সময় ও শব্দের এ সমন্বয় এবং বক্তব্য যে পরিস্কার ও বোধগম্য এবং শ্রবণনন্দিত ছিল তার ফিডব্যাক হিসেবে ছিল শ্রোতাদের মুহুর্মুহু করতালি অর্থাৎ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া। তাছাড়া বাক্য উচ্চারণে সাবলীলতা, দ্বিরুক্তিহীনতা এই ভাষণকে অনন্য ও কার্যকর করেছে।

বক্তব্যের শুরুতেই যেভাবে বঙ্গবন্ধু দুঃখ ভারাকান্ত হৃদয় নিয়ে হাজির হবার পরও বিকেন্দ্রীকরণের চিন্তা দিয়েই শুরু করেছেন তা ভবিষ্যত দেশের সকল এলাকা নিয়ে ভাবী রাষ্ট্রপ্রধানের সুষম চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। আবার ‘ভাইয়েরা আমার, আপনারা সবই জানেন ও বুঝেন’ বাক্যটির মধ্য দিয়ে উপস্থিত ও অনুপস্থিত শ্রোতাদের ক্ষমতায়নের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যা একজন নেতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। নেতা যদি বুঝাতে সক্ষম হন যে, তিনি কর্মীদের সুখ-দুঃখ নিয়ে যথেষ্ট ভাবেন এবং মূল্যায়ন করেন তাহলে প্রভাবিতের কাজটি অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

একঘেয়েমি দূর করতে বঙ্গবন্ধু ভাষণের মাঝে মাঝেই পাঁচটি প্রশ্ন তুলেছেন এবং অনেকক্ষেত্রে উত্তর দিয়েছেন। আবার কিছুক্ষেত্রে পরামর্শের প্রয়াস দেখিয়েছেন। পাঠক-শ্রোতাকে আলোড়িত করতে “কি অন্যায় করেছিলাম?, কি পেলাম আমরা? কিসের আবার টিসি?, যারা আমার মানুষের রক্ত নিয়েছে তাদের সাথে বসব এই প্রশ্ন গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

১৯ মিনিটের পুরো ভাষণে বঙ্গবন্ধু বর্তমান কালের যৌক্তিক ব্যবহারের পাশাপাশি কথোপকথনের স্বার্থে বর্তমান, অতীত ও ভবিষ্যত কালের সুন্দর সংমিশ্রনও ঘটিয়েছেন। আবার আদেশ- নির্দেশ বা সতর্ক সংকেত ব্যবহারের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু বাক্যগুলোকে সহজবোধ্য করার স্বার্থে সংক্ষিপ্ত করেছেন। যেমন- “২৮ তারিখে কর্মচারীরা গিয়ে বেতন নিয়ে আসবেন। প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ তৈরী করে তোল। সরকারী কর্মচারীদের বলি: আমি যা বলি তা মানতে হবে। যে পর্যন্ত এই দেশের মুক্তি না হবে, খাজনা-ট্যাক্স বন্ধ করে দেওয়া হল। কেউ দেবে না।” বঙ্গবন্ধু তাঁর ১৯ মিনিটের ভাষণে যেমন ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনার সাথে শ্রোতাদের পরিচিত করেছেন তেমনি তা স্বার্থকভাবে হৃদয়াঙ্গম করেছেন। “তোমাদের কাছে অনুরোধ রইল,প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ তৈরী করে তোল। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শক্ররমোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।” বঙ্গবন্ধু সবসময়ই জানতেন জেল-জুলুম-অত্যাচার আর পাকিস্তানিদের হাতে হত্যার বিষয় সবসময়ই তাকে তাড়া করে ফিরছে। তাই কৌশলগত কারণে ‘আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি’ কথাটি উচ্চারণ করে ভবিষ্যত কর্মপন্থা বাঙ্গালীর কাছে স্পষ্ট করেছেন। “আর যদি একটা গুলি চলে” একথা বলে রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করতেও ভুল করেননি তিনি।

বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যে কঠিন ও কোমলের এক অপূর্ব সহাবস্থান ছিল। কেউ যাতে বিনা কারণে বিচ্ছিনড়বতাবাদী বা সহিংস আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন অভিযোগ না করতে পারে; রাষ্ট্রের জন্ম-মৃত্যুর এমন সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি একদিকে যেমন বলেছেন, “আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব”; তেমনি আবার আশ্বাসবাণীও ছিল- “তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো। কেউ তোমাদের কিছু বলবে না।  কিন্তু আর আমার বুকের ওপরে গুলি চালাবার চেষ্টা করো না।

”বঙ্গবন্ধু স্বল্প সময়ে বক্তব্যকে পর্যাপ্ত তথ্যনির্ভর করেছেন এবং জনগণকেও তথ্যনির্ভর করে স্বাধীনতার স্বপড়ব দেখিয়েছেন। আবার এর মাধ্যমে তীব্র প্রণোদন প্রদানেও সক্ষম হয়েছেন। যে আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছে বহিশক্রর হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য, আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরীব-দুঃখী আর্ত-মানুষের জন্য তাদের বুকের উপর হচ্ছে গুলি।” বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণের পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ট গণমানুষের উপর এমন নির্যাতনের চিত্র অত্যন্ত গুরুত্ববহ ছিল।বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যে স্বভাবসুলত উক্তিরও বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে যা তাকে মেকিভাব থেকে দূরে রাখতে পেরেছে। যেমন পাকিস্তান সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন- ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখবার পারবা না।' 

 বঙ্গবন্ধু ভাষণে কারো উদ্ধৃতি ব্যবহারের পূর্বে জনগণের বোধগম্যতা বিবেচনায় রেখে নাম পরিচয় উল্লেখপূর্বক বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যেমন- বক্তৃতার মাঝে তিনি বলেন, “ আমি তাকে বলেছিলাম, জনাব ইয়াহিয়া খান সাহেব, আপনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, দেখে যান কিভাবে আমার গরীবের ওপরে, আমার বাংলার মানুষের বুকের ওপরে গুলি করা হয়েছে। কি করে মায়ের কোল খালি করা হয়েছে। আপনি আসুন, দেখুন, বিচার করুন।”

বঙ্গবন্ধুর ভাষণে প্রধান দায়িত্ব কর্মসূচি নির্ধারণ ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু কি কর্মসূচি দেবেন তার উপর দলীয় নেতাদের, গণমাধ্যমের, পাকিস্তান সরকারের সর্বোপরি সাধারণ জনগণের আগ্রহের শেষ ছিল না। এমনকি ভাষণে কি বলা যায় এ নিয়ে ভাষণের পূর্বে ছত্রিশ ঘন্টার দলীয় সভাও একটি নির্দিষ্ট উপসংহারে আনতে না পারায় পুরো দায়িত্ব বঙ্গবন্ধুকে দেয়া হয়।

সুচারুরূপে তিনি তার মেধা ও মননের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন এ ভাষণে। তিনি বলেছেন: “ আমি পরিস্কার অক্ষরে বলে দেবার চাই, আজ থেকে এই বাংলাদেশে কোর্ট, কাচারী, ফৌজদারী, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। গরীবের যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্য সমস্ত অন্যান্য জিনিসগুলো আছে সেগুলোর হরতাল কাল থেকে চলবেনা। রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি চলবে,লঞ্চ চলবে। শুধু সেক্রেটারিয়েট, সুপ্রীমকোর্ট, হাইকোর্ট, জজকোর্ট সেমি গভর্ণমন্টাল দপ্তরগুলো-ওয়াপদা চলবে না।” দেশের একজন অবিসংবাদিত নেতাকে আন্দোলনের ঘোষণা কতটা বিবেচনাপ্রসূত হতে হয় তা বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে শেখার রয়েছে।সর্বজনীন এ বক্তব্য ও জনযোগাযোগে কার্যকর ফল লাভের জন্য চ্যালেঞ্জ উত্থাপনের গুরুত্ব উপলব্ধি করেই বঙ্গবন্ধু দৃঢ় কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছিলেন, “ প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিতে শিখেছি, রক্ত আরো দেব- এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।”

যোগাযোগ আলোচনায় বলা হয়, বক্ত তার সূচনা ও উপসংহার পর্বটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সূচনা পর্বে শ্রোতাদের আকর্ষণ তৈরী করা এবং উপসংহারে গিয়ে সংজ্ঞা নির্ধারণী বা ব্রান্ডিং এর বিষয়টি ফুটে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের শেষ পর্যায়ে এসে তিনি বলেছেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” বঙ্গবন্ধু স্পেস ডেফিনেশনে প্রবেশ না করে সরাসরি বক্তব্য শেষ করে জয় বাংলা স্লোগান গানের মাধ্যমে তেজস্বী বক্ত শেষ করেছেন এবং সফলভাবে বাঙ্গালী জাতিকে আলোড়ন ও উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন।

তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শক্রর মোকাবেলা করতে হবে। এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু। আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।”

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইলস্টন চার্চিলের ১৯৪০ সালের ‘উই শ্যাল ফাইট’ এবং মার্টিন লুথার  কিংয়ের ১৯৬৩ সালের ‘ আই হ্যাভ এ ড্রিম’ এর মতো বঙ্গবন্ধু শেষ করেছিলেন “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”

বঙ্গবন্ধু তাঁর বক্তব্যে পূর্ব পাকিস্তানের ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস, মানুষের রক্তের ইতিহাস, রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিতের ইতিহাস, বায়ানড়ব, চুয়ান, ছেষট্টি, উনসত্তরের আন্দোলনের কথা  বলার পাশাপাশি যুদ্ধের প্রস্তুতি, গণতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র, শাসনতন্ত্র, সামরিক বাহিনী এবং দেশের অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করেছেন। বাঙ্গালী  জাতির এ ইমারতগুলো আমাদেরকে এখনো সাহস জোগায়, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অনুপ্রেরণা জোগায়। পুরো ভাষণের বিভিনড়ব পর্যায়ে তিনি দশটি করণীয় কর্তব্য নিয়েও আলোচনাকরেছেন কিন্তু বক্তব্যে কোন একঘেয়েমি ছিল না বরং সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে শেষ পর্যন্ত ধরে রেখে নিরস্ত্র বাঙ্গালীকে সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরের চেষ্টা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণটি অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ হিসেবে অভিহিত করেছেন। বিশাল জনসমুদ্রে পুনরাবৃত্তি, নোট বা টীকা ছাড়া ছেদহীনভাবে নির্দেশনামূলক কাব্যময় যে বক্তব্য তিনি ৭ মার্চ দিয়েছিলেন তা নিয়ে দেশে ও বিদেশে গবেষণা ও বিশ্লেষণ চলছে।

এসব গবেষণার মাধ্যমে দেশের ইতিহাস বিকৃতের যে প্রচেষ্টা বিভিনড়ব সময় করা হয়েছে তার সমুচিত জবাব দেয়া সম্ভব। বিভিনড়ব দৃষ্টিকোণের মতো যোগাযোগের দৃষ্টিকোণ থেকে এ ভাষণটি ছিল সফল, সার্থক ও সময়োপযোগী। পাঠক- শ্রোতাদের হৃদয়াঙ্গমের পাশাপাশি বাঙ্গালী জাতিকে অগিড়বস্ফুলিঙ্গের মত উজ্জীবিত রাখা এবং আগামীর আন্দোলনে পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় ভাষণটি যোগাযোগবিদ থেকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ পর্যন্ত সকলের জন্য একটি আদর্শ ভাষণ। সেই সাথে ইউনেস্কো ঘোষিত ঐতিহাসিক এ দলিলটি নশ্বর পৃথিবীতে অবিনশ্বর কীর্তির স্বাক্ষর হিসেবে যুগ যুগ বিশ্ব দরবারে উচ্চারিত হবে।

বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে যতগুলো জাতীয় দিবস রয়েছে, সবগুলোর সাথে রয়েছে আমাদের আত্মার সম্পর্ক। কিছু দিবস দেশ-জাতির গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছেও বটে। সাতই মার্চের এ ভাষণ তার অন্যতম। এসব মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে স্বগৌরবে। এই দিবস- ভাষণগুলোর সত্য ইতিহাস জেনে তরুণ সমাজকে জানানোর বিকল্প নেই। সেই সাথে শুধু বক্তব্য বা ভাষণ নির্ভর নয়, বরং বার্তাগুলোর অর্থ অন্তরে ধারণ ও আমাদের প্রত্যেকের কর্মে প্রতিফলিত হলেই বঙ্গহবন্ধুর সোনার বাংলা স্বপেড়ব নয়, বাস্তবে সম্ভব হবে। তাই ভাষণ শুধু ভাষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এটি হয়ে উঠুক দেশসেবার প্রেরণা,উন্নায়নের মূলমন্ত্র।

মন্তব্যঃ সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ 19108 বার।




সর্বশেষ আপডেট

তিন মাসে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ৩ সদস্যের ক্যানসার শনাক্ত পররাষ্ট্রনীতিতে ফ্লপ বাইডেন ও ট্রাম্প রাফায় পূর্ণ মাত্রার অভিযান ‘ইসরায়েলকে আরও বিচ্ছিন্ন করার’ ঝুঁকিতে ফেলবে : ব্লিঙ্কেন পুতিনকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন ঈদযাত্রা নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন করতে ৭ সিদ্ধান্ত আইপিইউ অ্যাসেম্বলি সম্মেলনে যোগদানের জন্য স্পিকারের ঢাকা ত্যাগ জিল্লুর রহমান ছিলেন মাটি ও মানুষের নেতা : মতিয়া চৌধুরী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান অনুকরণীয় রাজনীতিবিদ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী উন্নয়ন কাজে জনগণের কল্যাণের বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতারা ক্লান্ত, কর্মীরা হতাশ : সেতুমন্ত্রী বিএনপি সফল হলে দেশে অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান হতো : তথ্য প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিলে বলেই বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে : এনামুল হক শামীম পথশিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বুথ ফেরত জরিপে বিপুল ভোটে জয়ী পুতিন ওয়াশিংটনে মিডিয়া ডিনারে ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনায় বাইডেন বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারো নেই : ওবায়দুল কাদের নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করতে হবে : রেলপথ মন্ত্রী পাঁচ হাজার বছরের জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু : পররাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথই আমাদের পথ : সেতুমন্ত্রী আব্দুল হাই এমপির মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক