ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৬ ২০২৪,

এখন সময়: ০৩:০২ মিঃ

বাংলাদেশে ভারতীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ডেস্ক নিউজ | ১০:২২ মিঃ, অক্টোবর ৪, ২০১৯



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের বিশেষ করে ভারতের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে উদার পরিবেশ বিরাজ করছে।

নয়াদিল্লির হোটেল তাজ প্যালেসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের ইন্ডিয়া ইকোনোমিক সামিটে বাংলাদেশের ওপর কৌশলগত আলোচনাকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারী বিশেষ করে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের শিক্ষা, হাল্কা প্রকৌশল শিল্প, ইলেকট্রনিক্স শিল্প, অটোমোটিভ শিল্প, কৃত্তিম বৃদ্ধিমত্তা শিল্পের মতো ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগ করার সময়।’

তিনি বলেন, ‘আজ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি স্বাধীন ও উদার বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে। বিনিয়াগবান্ধব বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরদের জন্য আইনি সুরক্ষা, উদার রাজস্বব্যবস্থা, মেশিনপত্র আমদানির ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়, আনরেস্ট্রিকটেড এক্সিট পলিসি, সম্পূর্ণ বিনিয়োগ ও পুঁজি নিয়ে চলে যাবার সুবিধাসহ নানাবিধ সুবিধা রয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নিরবিচ্ছিন্ন সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত করে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছি। এদের মধ্যে ১২টি অঞ্চল ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। দুটি অঞ্চলকে ভারতের বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশ কয়েকটি হাই-টেক পার্ক প্রস্তুত করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশর এই ব্যাপক উন্নয়নের জন্য সামাজিক মূল্যবোধ ও বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রশংসা করে বলেন, ‘অনেকেই বাংলাদেশকে তিন কোটি মধ্য ও উচ্চবিত্ত মানুষের একটি বাজার’ ও ‘অলৌকিক উন্নয়নের’ হিসেব দেখে থাকেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের প্রধান শক্তি হচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধ ও বাংলাদেশের প্রতি মানুষের আস্থা। সাম্যতা, সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার আকাঙ্ক্ষার পাশাপাশি আমাদের নেতৃত্বের প্রতি তাদের আস্থা।’

৪০টি দেশের ৮০০ প্রতিনিধি দুইদিনের এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। শুক্রবার সম্মেলনটি শেষ হবে। সমাপনী অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতা দেবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক এবং ভারতীয় ব্যবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্থান হিসেবে নজর কাড়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করেছে। আমরা এই উপ-অঞ্চলের জন্য একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র হতে পারি। আমাদের নিজস্ব ১৬২ মিলিয়ন জনসংখ্যার বাইরেও বাংলাদেশ প্রায় তিন বিলিয়ন মানুষের একটি ভূখণ্ডের সম্মিলিত বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে।

তিনি গত বছরের এইসএসবিসির পূর্বাভাসের উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে ২৬তম সর্ববৃহৎ অর্থনীতি হবে। দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, এর একটি হচ্ছে আমাদের উন্মুক্ত সমাজ, ধর্মীয় সম্প্রীতি, উদার মূল্যবোধ, ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতি। অপরটি হলো আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর দুই তৃতীয়াংশ তরুন। এদের বেশির ভাগের বয়স ২৫ বছরের নিচে। তারা দক্ষতা অজর্ন করছে, তারা প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন, তারা প্রতিযোগিতামূলক কাজে যুক্ত হতে প্রস্তুত।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আত্মবিশ্বাসী জনগণ, সুযোগ্য নেতৃত্ব এবং শাসনপ্রক্রিয়ায় উন্নয়ন যাত্রায় আমরা অব্যাহতভাবে শিখছি। তিনি বলেন, একটি স্থিতিশীল ও মানবিক রাষ্ট্র বাংলাদেশের নেতৃত্ব খুবই সংবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল, সেইসঙ্গে দেশটির রয়েছে দৃঢ় সামষ্টিক অর্থনৈতিক বুনিয়াদ, সম্ভনাময় ও মুক্ত অর্থনীতি যা একটি শান্তিপূর্ণ ও অগ্রসর জাতি উদাহরণ সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশ এখন জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে একটি উন্নয়নশীল দেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। তিনি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির উল্লেখ করে বলেন, অন্যান্য অনেক দেশের মতোই আমরাও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি, তবে আমাদের জানা আছে কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ সুবিধায় রূপান্তরিত করতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ১ শতাংশের রেকর্ড করেছে। আমরা দুই ডিজিট প্রবৃদ্ধি অজর্নের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০০৯ সালের পর থেকে ১৮৮ শতাংশ বেড়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় হয়েছে প্রায় ২০০০ মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশকে একটি দ্রুতবর্ধনশীল উচ্চমূল্য, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক দেশ হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা গত বছরে কোরিয়ায় ১২টি শিল্প রোবট রফতানি করেছি। বাংলাদেশে তৈরি চারটি জাহাজ ভারতে আসছে। তিনি বলেন, ভারতের রিলায়েন্স কোম্পানি সম্প্রতি বাংলাদেশে তৈরি বিপুল সংখ্যক রেফ্রিজারেটর আমদানি করেছে। বাংলাদেশে ছয় লাখ আইটি ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। সর্বাধিক সংখ্যক লোক ফ্রিল্যান্সিং করছে।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের কৃষি সম্পর্কে বলেন, আমাদের কৃষি এখন আর অন্যের ওপর নির্ভরশীল নয়, আমাদের কৃষি এখন পুরোপুরি স্বাবলম্বী। বিশ্বে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন চতুর্থ বৃহৎ দেশ, পাটে দ্বিতীয়, আমে চতুর্থ, শাকসবজি উৎপাদনে পঞ্চম, এবং অভ্যন্তরীণ মাছ চাষে চতুর্থ। আমরা প্রধান শস্য ও ফলের জিন কোড করছি এবং এ ব্যাপারে অগ্রসর হচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালের পর থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করার উল্লেখ করে বলেন, আমরা ২০০৯ সালের পর দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছি। তৃণমূল পযার্য়ে শত ভাগ লোক আইসিটি সুবিধা পাচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চম সর্ববৃহৎ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দেশ। আমরা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা ক্যাশলেস সোসাইটির দেশের দিতে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে। আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশ শহরে বাস করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধা ৪০ শতাংশ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।

ডব্লিউইএফের প্রেসিডেন্ট বোর্জ ব্রান্ডসহ সংস্থার নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তারা দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে নেতৃত্বের রোল মডেল হিসেবে বর্ণনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সেমিনারে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে একটি পরিবেশবান্ধব সরকার রয়েছে।

মন্তব্যঃ সংবাদটি পঠিত হয়েছেঃ 15986 বার।





এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

০৯:২৭ মিঃ, এপ্রিল ২২, ২০২৩

আমরা শান্তি চাই: ঈদ উপলক্ষে মমতা

সর্বশেষ আপডেট

বিটিভির মহাপরিচালক দুর্নীতিবাজ কবে ওএসডি হবে? তিন মাসে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ৩ সদস্যের ক্যানসার শনাক্ত পররাষ্ট্রনীতিতে ফ্লপ বাইডেন ও ট্রাম্প রাফায় পূর্ণ মাত্রার অভিযান ‘ইসরায়েলকে আরও বিচ্ছিন্ন করার’ ঝুঁকিতে ফেলবে : ব্লিঙ্কেন পুতিনকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন ঈদযাত্রা নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন করতে ৭ সিদ্ধান্ত আইপিইউ অ্যাসেম্বলি সম্মেলনে যোগদানের জন্য স্পিকারের ঢাকা ত্যাগ জিল্লুর রহমান ছিলেন মাটি ও মানুষের নেতা : মতিয়া চৌধুরী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান অনুকরণীয় রাজনীতিবিদ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী উন্নয়ন কাজে জনগণের কল্যাণের বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতারা ক্লান্ত, কর্মীরা হতাশ : সেতুমন্ত্রী বিএনপি সফল হলে দেশে অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান হতো : তথ্য প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিলে বলেই বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে : এনামুল হক শামীম পথশিশুদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বুথ ফেরত জরিপে বিপুল ভোটে জয়ী পুতিন ওয়াশিংটনে মিডিয়া ডিনারে ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনায় বাইডেন বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারো নেই : ওবায়দুল কাদের নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করতে হবে : রেলপথ মন্ত্রী পাঁচ হাজার বছরের জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু : পররাষ্ট্রমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথই আমাদের পথ : সেতুমন্ত্রী